স্তন পরীক্ষা করার সবচেয়ে উত্তম সময় হলো মাসিকের কিছুদিন পরে। সাধারণত মাসিকের সময় স্তনে কিছুটা টনটনে ভাব, খানিকটা ফোলা-ফোলা থাকে। কিন্তু মাসিকের কিছুদিন পরে স্তন টনটনে অথবা ফোলা ভাবটা একটু কম থাকে। আর এই সময়টাতেই স্তন পরীক্ষা করার উপযুক্ত সময়। আর আপনার যদি মাসিক বন্ধ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে পরীক্ষা করার জন্য মাসের যে কোনো একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিবেন, যাতে করে প্রতি মাসে ঐদিনে পরীক্ষা করতে পারেন।
ধাপ “ক”, “খ” এবং “গ” করার সময় ভালো করে তাকিয়ে দেখতে হবে
ক
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে স্তন দুটোর দিকে তাকান। দেখুন কোনো অপরিচিত কিছু – নিপলের আকার, লালচে ভাব, খসখসে ভাব, একটু ফুলে থাকা বা অন্য কিছু দেখা যায় কিনা। নিপল থেকে কোনো রস বের হয় কিনা তা লক্ষ্য করুন। কোনো রস দেখা গেলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন, তবে মনে রাখবেন অনেক সময় হরমোন ঔষুধ খাবারের ফলেও রস বের হতে।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/1.png)
খ
আপনার হাত দুটো কোমরে চেপে ধরুন এবং আয়নার দিকে একটুখানি জুকে দাঁড়ান এবং একই সাথে কাঁধ এবং কনুই শক্ত করে সামনে আনুন (যেমনটি আপনি কাউকে জড়িয়ে ধরার সময় নিয়ে আসেন)। এমন ভাবে থাকার সময় ভালো করে লক্ষ্য করুন যে আপনার স্তনে কোনো পরিবর্তন দেখা যায় কিনা। এখন কাঁধ সামনে ঝুকে থাকা অবস্থায় মাথা উপরে উঠান, খেয়াল করবেন একটু স্তন উন্নতি অপেক্ষা একটু ছোট। এতে ভয় পাবার কিছু নেই। তবে এছাড়া অন্য কোনো পরিবর্তন দেখা গেলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/2-1.png)
গ
আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকুন আর আপনার হাত দুটোকে মাথার পিছনে রাখুন। এখন আপনার স্তনের নিচের দিকে তাকিয়ে দেখুন অস্বাভাবিক কিছু চোখে পরে কিনা।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/3-1.png)
ঘ
আপনার বাম হাতটি কোমরে রাখুন এবং
বাম কাঁধটি একটু সামনের দিকে ঝুঁকে রাখুন। এখন এখন ডান হাত দিয়ে বাম বগলের আশে-পাশে চেপে দেখুন কোনোরকম গুটলি বা গোটা জাতীয় কোনোকিছু অনুভব করা যায় কিনা। একই ভাবে কাঁধের আসে-পাশে চেপে দেখুন। ঠিক একইরকম ভাবে ডান পাশে পরীক্ষা করে দেখুন। কোনো অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়লে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/4-1.png)
ঙ
আপনার বাম হাতটি ছবির মতো করে ধরুন। প্রতিবার পরীক্ষা করার সময় প্রথমে হালকা, তারপর মাঝারী এবং শেষে জোরে চাপ দিতে হবে। প্রতিবার পরীক্ষা করার সময় আপনি যে কোনো তিনটি পদ্ধতিতে করতে পারেন – ১. লম্বালম্বি ভাবে, ২. গোলাকার ভাবে এবং ৩. বাইরের থেকে ভেতরের দিকে।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/5-1.png)
১. লম্বালম্বি ভাবে
স্তনের একেবারে বাইরের অংশ থেকে লম্বালম্বি ভাবে আঙ্গুল তিনটিকে উপর থেকে নিচের দিকে আনুন। একবার স্তনের নিচের দিকে পয়সা গেলে নিচ থেকে উপরের দিকে আনুন এবং এভাবে করে পুরো স্তন পরীক্ষা করা শেষ না হওয়া পর্যন্ত করতে থাকুন। প্রথমে হালকা, তারপর মাঝারী এবং শেষে জোরে চাপ দিতে হবে।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/6-1.png)
২. গোলাকার ভাবে
স্তনের একেবারে উপরের অংশ থেকে গোলাকারভাবে আঙ্গুল তিনটিকে স্তনের চারপাশে ঘুরিয়ে আনুন। এভাবে নিপল পর্যন্ত না পৌঁছানো পর্যন্ত করতে থাকুন। প্রথমে হালকা, তারপর মাঝারী এবং শেষে জোরে চাপ দিতে হবে।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/7-1.png)
৩. বাইরের থেকে ভেতরের দিকে
স্তনের একেবারে বাইরের অংশ থেকে আঙ্গুল তিনটিকে ঘুরিয়ে বাইরের থেকে ভিতরের দিকে আনুন। এভাবে করে পুরো স্তন পরীক্ষা করা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আঙ্গুল তিনটিকে ঘুরিয়ে বাইরের থেকে ভিতরের দিকে আনুন। প্রথমে হালকা, তারপর মাঝারী এবং শেষে জোরে চাপ দিতে হবে।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/8-1.png)
স্তন পরীক্ষা করার সময় একবারের জন্যেও আঙুল স্তন থেকে উঠবেন না। যেই পদ্ধতিতেই পরীক্ষা করেন না কেন মনে করে পুরো ব্রেস্ট-বোন, কলার বোন, স্তনের ওপরের দিক এবং ব্রা দিয়ে আপনার যতটুকু ঢাকা থাকে সবটুকু পরীক্ষা করবেন। দুই স্তনের মাঝের অংশ এবং দুই বগল ভালো করে লক্ষ্য করুন। লালচে ভাব, খসখসে ভাব, একটু ফুলে থাকা বা অন্য কিছু দেখা গেলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
চ
একদম চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। বাম হাতটি উপরে তুলে বাম কাঁধের নিচে একটু পাতলা বালিশ রাখুন। এখন “ঙ” ধাপে দেখানো যেকোনো একটি পদ্ধতিতে পরীক্ষা করুন।
![](https://rckushtia.org/wp-content/uploads/2019/07/9-1024x530.png)
অনেকে ধাপ “ঘ” এবং “ঙ” গোসলের সময় বেশি করতে পছন্দ করেন, কেননা সাবান মাখা এবং ভেজা অবস্থায় স্তন পরীক্ষা করতে সহজ হয়। আপনি ইচ্ছে করলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।